যেভাবে আমি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গবেষণার কাজ পাই
লেখকঃ সঞ্চিতা সূত্রধর, মাস্টার্স শিক্ষার্থী, স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগ
আমি জাতীয় কবি
কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের, স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগে স্নাতক
সম্পূর্ন করা একজন শিক্ষার্থী। যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম রিসার্চ বা
গবেষণা যে কি তা বাকি সবার মত আমার কাছেও ছিল সম্পূর্ন নতুন। বিভাগের শ্রদ্ধেয়
শিক্ষকদের মাধ্যমেই হাতে খড়ি হয় গবেষণার। কিন্তু তখন বুঝাতে পারিনি যে এই
গবেষণার কাজের মাধ্যমে নিজের এক আলাদা পরিচয় ও কাজের জায়গা তৈরি হবে।
বিভাগীয় কোর্সের
এসাইনমেন্ট গুলো হতো গবেষণা রিপোর্টে মত, যেখানে তথ্য সংগ্রহের জন্য যেতে হত মাঠ
পর্যায়ে, এক কথায় হাতে কলমে শিখানো হত গবেষণা সম্পর্কিত সকল বিষয়। প্রথম প্রথম
ভালো না লাগলেও কখন যে গবেষণার প্রতি আলাদা ভালো লাগা শুরু হলো সেটা বুঝতে পারলাম
স্নাতকের ফাইনাল মনোগ্রাফের রিপোর্টে কাজ করতে গিয়ে। নিজের গবেষণা দক্ষতা বৃদ্ধি
করার জন্য শ্রদ্ধেয় শিক্ষক সাদিক হাসান শুভ স্যারের আয়োজিত SPSS (Statistical
Package for the Social Sciences) সফটওয়্যারের কোর্সের সাথে যুক্ত হলাম যা আমার
গবেষণা কাজের সিভি কে আরো বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া পিছনে সবোর্চ্চ ভূমিকা রাখছে।
যে কোন প্রাইভেট বা
এনজিও প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য আবেদন করার জন্য থাকতে হয় প্রফেশনাল সিভি। গবেষণার
কাজের ক্ষেত্রেও সিভির বিষয়টা খুবই
গুরুত্বপূর্ণ, এখানে পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে,কি কি বিষয়ে গবেষণায় আপনার
দক্ষতা আছে সব কিছু উল্লেখ করতে।
এর পর আরো বেশি
গবেষণা ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য তৈরি করে ফেলাম সিভি, সেখানে আমার গবেষণা
বিষয় দক্ষতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে মজার বিষয় হলো এর পরই কাছের এক
সিনিয়র ভাইয়ের (মোমেন ভাই) সাহায্যে আবেদন করলাম Food for the Hungry প্রতিষ্ঠানে এবং যোগ দিলাম রিসার্চ
এ্যাসিসন্টেন হিসেবে। এরপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন Caritas Bangladesh, Inspira
Advisory, Datascape Research firm এমনকি BRAC James P Grant School of Public Health এর মত
প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি।
এখন প্রশ্ন আসতে
পারে কিভাবে আমি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গবেষণার কাজ পেয়ে থাকি। তাহলে বলতে হয় একুশ শতকের
সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ডিজিটালাইজেশন, হ্যা! ঠিকই শুনেছেন। বর্তমান যুগে বেশি ভাগ
কাজের স্যার্কুলারই অনলাইন প্রকাশ করা হয় এবং এই অনলাইনে অন্যতম প্লাটফর্ম হলো
ফেসবুক। শুধু সামাজিকতাই নয় ফেসবুকে মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কাজেরও সুযোগ রয়েছে।
তেমনি গবেষণার সম্পর্কিত কিছু ফেসবুক পেজ আছে যেখানে নিয়মিত বিভিন্ন সংস্থার
গবেষণার জন্য জনবল নেওয়া জন্য পোষ্ট করা হয়। যেমন Research Help Bangladesh,
Research and Innovation Network ইত্যাদি। তাছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের
অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ও ফেসবুক পেজ।
অনলাইনে এই বিভিন্ন
গ্রুপ ও পেজে স্যার্কুলার দেখে নিজের পছন্দ মত প্রতিষ্ঠানে সিভি দিতে থাকি এবং
প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত হওয়ার পর চুড়ান্ত ভাবে নির্বাচিত হওয়ার জন্য দিতে হত
লিখিত পরীক্ষা ও ভাইভা। সেখানে নির্বাচিত হওয়ার পরই উপরোক্ত প্রতিষ্ঠানে পেয়েছি
কাজ করার সুযোগ এবং একই সাথে গবেষণা সেক্টরে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারছি।
আর একটা
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গবেষণার কাজ পাওয়া ক্ষেত্রে কাজ
করেছে সেটা হলো নেটওয়ার্কিং। যাদের সাথে গবেষণার কাজ করেছি তাদের মাধ্যমে
পরবর্তীতে অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ পেয়েছি। অবশ্যই কাজের জায়গায় সবোর্চ্চটা দিয়ে
কাজ করতে হবে এবং সহকর্মীদের সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে কাজ করতে হবে।
আপনার যদি গবেষণা
সেক্টরে কাজ করার ইচ্ছা বা এটিকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনিও
একই ভাবে শুরু করতে পারেন।
No comments